থাকেন ভারতে, বেতন নেন বাংলাদেশ থেকে!

প্রকাশিত: ১:১২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২৫

থাকেন ভারতে, বেতন নেন বাংলাদেশ থেকে!

নিউজ ডেস্ক :

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে বছরের অধিকাংশ সময় ভারতে অবস্থান করেও বাংলাদেশ সরকারের অর্থে চলা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগের তীর কলেজের অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ এবং তার স্ত্রী সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক চম্পা রানী মন্ডল এর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই শিক্ষক দম্পতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীতে একটি বাড়ি কিনে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা বছরের অধিকাংশ সময় ভারতে থাকলেও বাংলাদেশে কলেজ থেকে নিয়মিত বেতন তোলেন এবং দেশে না থেকেই পদে বহাল থাকেন।

অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তার স্ত্রী বর্তমানে মেডিকেল ছুটিতে ভারতে অবস্থান করছেন এবং তিনি নিজে বর্তমানে বাংলাদেশেই আছেন। তিনি দাবি করেন, ছুটি দু’দফায় ৬ মাস মেয়াদে অনুমোদিত হয়েছে এবং সবকিছু নিয়ম মেনেই হয়েছে।

তবে কলেজ সংশ্লিষ্ট একাধিক শিক্ষক, যারা পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানান—এই দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে কলেজ গভর্নিং বডি ও প্রশাসনিক মহলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতায় রয়েছেন কলেজের অফিস সহায়ক সজল সরকার।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা নবগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রেমানন্দ সরকার বলেন, “অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ চাকরির শুরু থেকেই অনিয়মে জড়িত। ভারতেই তার পরিবার বসবাস করে এবং সেখান থেকেই কার্যত চাকরি চালিয়ে যাচ্ছেন। মাত্র নামমাত্র একটি মেডিকেল ছুটি দেখিয়ে ৬ মাস ধরে দেশের বাইরে থাকা কোনভাবেই নিয়মসঙ্গত নয়।”

এ বিষয়ে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফ-উল আরেফীন বলেন, “অভিযোগগুলো তদন্তাধীন রয়েছে। প্রমাণ মিললে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে স্থানীয়দের প্রশ্ন—বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন গাফিলতির দায় কে নেবে? বিদেশে থেকে এভাবে ‘বেতন উত্তোলনের’ সুযোগ কেন এবং কিভাবে দেওয়া হয়? তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে, এই ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলেও মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।