লোহাগড়ায় ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এএসআই ইলিয়াস ক্লোজড

প্রকাশিত: ১১:২১ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২৫

লোহাগড়ায় ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এএসআই ইলিয়াস ক্লোজড

 

✍️ রাশেদ রাসু, লোহাগড়া (নড়াইল) থেকে:

নড়াইলের লোহাগড়া থানায় নাশকতা মামলার এক আসামিকে ঘুষের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে অবশেষে অভিযুক্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ইলিয়াস হোসেনকে ক্লোজড করা হয়েছে। সোমবার (৭ জুলাই) রাত ৮ঃ০০ টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা কাজী ইয়াজুর রহমান বাবুর দায়ের করা নাশকতার মামলার আসামি মো. জিল্লুর রহমানকে (৫ জুলাই রাতে) ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের এড়েন্দা চৌরাস্তা নামক এলাকা থেকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এএসআই ইলিয়াসের বিরুদ্ধে। পরে গত (৬ জুলাই) মামলার বাদী বাবু তার ফেসবুক পেজে বিস্তারিত লিখে অভিযোগ জানানোর পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন,

> “বিষয়টি তদন্তাধীন ছিল। প্রাথমিক সত্যতা মেলায় এএসআই ইলিয়াস হোসেনকে থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর এবং পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তির সাথে সংশ্লিষ্ট। এমন ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ছাড়াও অভিযুক্ত এএসআই ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অতীতেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন সময়ে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে ১০ হাজার টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করতেন। এসব অভিযোগ প্রশাসনের নজরে আসায় তাকে ক্লোজড করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এদিকে আসামি জিল্লুর রহমানের পরিবার জানায়, ঘটনার পর থেকে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। একটি অজ্ঞাত নাম্বার থেকে ফোন করে তাদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাদের।

এ বিষয়ে কাজী ইয়াজুর রহমান বাবু বলেন,

> “আমরা চাই দ্রুত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। পুলিশের মধ্যে থাকা এইসব দুর্নীতিবাজদের কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

সচেতন মহল মনে করছেন, এ ধরণের ঘুষ কেলেঙ্কারি শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি জনআস্থা নষ্ট করে না, বরং পুরো বিচার প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। ফলে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি।