রেললাইনে মৃত্যুর মিছিল, দেড় বছরে প্রাণ হারালেন ২৪৪ জন বিডি সময় নিউজ ২৪ বিডি সময় নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৫, ২০২৫ রেললাইনে মৃত্যুর মিছিল, দেড় বছরে প্রাণ হারালেন ২৪৪ জন স্টাফ রিপোর্টার | চট্টগ্রামে রেললাইনের পাশে অসতর্ক চলাচল, মোবাইল ফোনে কথা বলা ও হেডফোনে গান শোনা এখন প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দেড় বছরে (জানুয়ারি ২০২৩ থেকে জুন ২০২৪ পর্যন্ত) চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪৪ জনের। চলতি বছরেই (২০২৪) প্রথম ছয় মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৯ জন। রেলওয়ে পুলিশ ও জিআরপি সূত্রে জানা যায়, এসব দুর্ঘটনার পেছনে মূল কারণ হিসেবে অসতর্কতা, সচেতনতার অভাব এবং অবৈধভাবে রেললাইন পারাপারকে দায়ী করা হচ্ছে। গত ১৯ জুন মীরসরাইয়ের বারৈয়ারহাট এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় তিন তরুণ দ্রুতগামী ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ট্রেনের হুইসেল বাজলেও তারা সরতে পারেননি। এ ঘটনায় জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দেয়। রেলওয়ে পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালে নিহত ৮৯ জনের মধ্যে ৪৪ জনই লাইনের ওপর বসে আড্ডা দিতে গিয়ে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। আর ২০২৩ সালে মারা যাওয়া ১৫৫ জনের মধ্যে ১১২ জনই রেললাইনে অবস্থান করছিলেন। চট্টগ্রাম জেলা রেলওয়ে পুলিশ সুপার শাকিলা সোলতানা বলেন, “সবচেয়ে বড় কারণটি হলো অসতর্কতা। অনেকে কানে হেডফোন দিয়ে হাঁটে, কেউ মোবাইলে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার হয়। ফলে ট্রেন আসার শব্দ শুনতে না পেয়ে তারা দুর্ঘটনার শিকার হন।” রেলক্রসিং দ্রুত পার হওয়ার সময় ২০২৩ সালে মারা যান ২৯ জন, আর চলতি বছরে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় বছরে আরও ১২ জন মারা গেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, রেললাইন পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত সেতু বা আন্ডারপাস না থাকায় সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পার হচ্ছেন। এর ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, “ট্রেন কমপক্ষে ১০০ মিটার আগে থেকে ব্রেক করতে হয়। কিন্তু অনেকেই হেডফোন কানে দিয়ে বা মোবাইল ফোনে মগ্ন থেকে রেললাইনে উঠে পড়ে। এতে করে ট্রেন চালকদেরও কিছু করার থাকে না।” উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলায় প্রধান ও শাখা মিলিয়ে রেললাইনের দৈর্ঘ্য ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি। উন্নত বিশ্বে যেখানে রেললাইন সবচেয়ে নিরাপদ মনে করা হয়, সেখানে বাংলাদেশে পরিস্থিতি একেবারে উল্টো। রেলওয়ে প্রশাসন ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মৃত্যুর মিছিল বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি, নিরাপদ পারাপার নিশ্চিত করা এবং আইন প্রয়োগে কঠোরতা দরকার। SHARES জাতীয় বিষয়: