মায়ের মরদেহ রেখে পরীক্ষায় অংশ নিল দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থী

প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২৫

মায়ের মরদেহ রেখে পরীক্ষায় অংশ নিল দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

টাঙ্গাইলের সখীপুরে চরম ব্যক্তিগত শোকের মাঝেও দায়িত্ববোধের অনন্য নজির স্থাপন করলেন দুই এইচএসসি পরীক্ষার্থী। মায়ের মরদেহ বাড়িতে রেখেই অশ্রুসিক্ত চোখে পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হন তারা।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী লাবনী আক্তার পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের দুই কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন ও নাছির উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সায়মা আক্তার সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এবং লাবনী আক্তার সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষার হলে আসার সময় দুজনের চোখেই ছিল অশ্রু। সহপাঠী ও কর্তব্যরত শিক্ষকদের সহায়তায় তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে সক্ষম হন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সায়মা আক্তারের মা শিল্পী আক্তার (৪০) কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। ২ জুলাই দিবাগত রাত ৩টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। সায়মা দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট। অন্যদিকে, লাবনী আক্তারের মা সফিরন (৪৫) গতরাত সাড়ে ৯টার দিকে ইন্তেকাল করেন। তিনি চার সন্তানের জননী ছিলেন।

সায়মা ও লাবনী—উভয়েই পরিবারের ছোট সন্তান এবং তাদের মায়েদের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দাফনের প্রস্তুতির মধ্যেও স্বজনদের পরামর্শে তারা পরীক্ষাকেন্দ্রে যান। লাবনীর মায়ের জানাজা হয় বেলা সাড়ে ১১টায়, আর সায়মার মায়ের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বাদ জোহর।

হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন বলেন, “সায়মা মেধাবী শিক্ষার্থী। তার মতো একজন শিক্ষার্থীর মায়ের মৃত্যু শোক সত্ত্বেও পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অত্যন্ত কষ্টদায়ক ও হৃদয়বিদারক।”

এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোক ও সমবেদনার ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই দুই শিক্ষার্থীর মানসিক দৃঢ়তা ও দায়িত্ববোধকে সাহসিকতার নিদর্শন হিসেবে অভিহিত করেছেন।