কৌশলে জমি ও পুকুর লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়ি ছাড়া করলেন দুই ছেলে বিডি সময় নিউজ ২৪ বিডি সময় নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ৪:৫২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২৫ কৌশলে জমি ও পুকুর লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়ি ছাড়া করলেন দুই ছেলে নিজস্ব প্রতিবেদক,সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে চরম মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন এক বৃদ্ধ কৃষক দম্পতি। দুই ছেলের প্রলোভনে পড়ে জমি ও পুকুর লিখে দেওয়ার পর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তারা। এ ঘটনায় বৃদ্ধ পিতা তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী ছানোয়ার হোসেন মন্ডল (৬৭) ও তার স্ত্রী মোছা. মতিজান নেছা তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের কুসুম্বী গ্রামের বাসিন্দা। তাদের দুই ছেলে—মো. মোক্তার হোসেন মন্ডল (৩৫) ও মো. আব্দুল মানিক মন্ডল (৩০)। প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় তিন বছর আগে ছেলেরা বৃদ্ধদের বয়স্ক ভাতা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাদের সব জমি ও পুকুর নিজেদের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন। এরপর থেকেই শুরু হয় অবহেলা, মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন। একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও কোনো সমাধানে আসেনি ছেলেরা। ছানোয়ার হোসেন বলেন, “সম্পত্তি দেওয়ার কিছুদিন পর থেকেই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের রূপ পাল্টে যায়। একাধিকবার আমাকে আর আমার স্ত্রীকে মারধর করেছে। বাধ্য হয়ে স্ত্রীর বড় বোনের বাড়িতে আশ্রয় নিই। পরে ঢাকায় গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীর কাজ নিই। অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও ঘরে উঠতে দেয়নি তারা।” মোছা. মতিজান নেছা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “এ বয়সে আর কাজ করতে পারি না। ছেলে-বউয়ের নির্যাতনে পাগলপ্রায় হয়ে গেছি। দুই মুঠো ভাতের জন্য এখন পরের বাড়িতে মুখ পাততে হয়।” স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রাজিব সরকার রাজু বলেন, “ঘটনাটি সত্য। কয়েকবার সালিশ হলেও ছেলেরা সমঝোতায় আসেনি। তারা খুব নিষ্ঠুর আচরণ করেছে।” তবে অভিযুক্ত বড় ছেলে মোক্তার হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বাবা-মা নিজের ইচ্ছায় আমাদের জমি দিয়েছেন। আমরা নির্যাতন করিনি।” এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া অসহায় দম্পতিকে সহায়তার বিষয়েও চিন্তা করছি।” এ ঘটনায় স্থানীয় সমাজে নিন্দার ঝড় উঠেছে। অনেকে বলছেন, এটি শুধু একটি পারিবারিক ঘটনা নয়, বরং সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের নগ্ন প্রতিচ্ছবি। SHARES অপরাধ বিষয়: