নড়াইলের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে তালাবদ্ধ কক্ষ, চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা বিডি সময় নিউজ ২৪ বিডি সময় নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ১২:০৩ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২৫ নড়াইলের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে তালাবদ্ধ কক্ষ, চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা রিপোর্টার: জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল | সরকারি উদ্যোগে গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য প্রতিষ্ঠিত হলেও নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খড়রিয়া বাজার সংলগ্ন পেড়লি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত সেবা। হাসপাতালের কক্ষগুলো বেশিরভাগ সময় তালাবদ্ধ থাকে, চিকিৎসক ও ওষুধের অভাবে রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে বাড়ি। শীতলপাটি গ্রামের বাসিন্দা মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, “সরকার এই হাসপাতাল গড়েছে আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য। কিন্তু আমরা এখানে কোনো সেবা পাই না। ডাক্তার থাকে না, ওষুধ নেই, অনেক সময় তো হাসপাতালই তালা দেওয়া থাকে।” শনিবার (২৮ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান ফটকের পকেট দরজা খোলা থাকলেও ভবনের প্রায় সব কক্ষ তালাবদ্ধ। নারী ও শিশু রোগীরা চিকিৎসা, পরামর্শ কিংবা ওষুধ নিতে এসেও সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালের অফিস সহায়ক রফিকুল ইসলাম জানান, “এখানে একজন ফার্মাসিস্ট, একজন পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা এবং একজন সংযুক্ত চিকিৎসক রয়েছেন। তারা সপ্তাহে দুই দিন করে সেবা দেন। আজ যে চিকিৎসকের আসার কথা ছিল, তিনি ছুটিতে আছেন।” স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ঠিকভাবে পরিচালিত হলে পেড়লি, পাঁচগ্রাম ও সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ উপকৃত হতেন। কিন্তু পাঁচ বছর আগে উদ্বোধন হওয়া এই কেন্দ্রটি এখনও জনবল সংকটে ভুগছে। ২০২০ সালে ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে দুটি তিনতলা ভবন—একটি হাসপাতাল, অন্যটি চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের আবাসিক কোয়ার্টার। হাসপাতাল ভবনে রয়েছে ১০টি কেবিন ও দুটি ওয়ার্ডে ১০টি শয্যা, এমনকি আধুনিক অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও রয়েছে। অথচ এখনো সেসব ব্যবহৃত হয় না। হাসপাতালের পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা গীতা রানী বিশ্বাস বলেন, “চিকিৎসক না থাকায় আমরা ডেলিভারি কিংবা সিজার করতে পারি না। শুধু গর্ভবতী মায়েদের কিছু সেবা দেওয়া হয়। এখানে একজন ডাক্তার, আয়া, নাইট গার্ড, এমএলএস কেউ নেই। আমার একার পক্ষে সব সামাল দেওয়া সম্ভব না।” জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক আলিফ নূর বলেন, “আমরা স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় হাসপাতালটি চালু রেখেছি। আমাদের উপজেলা মেডিকেল অফিসার সেখানে সুবিধাজনক সময়ে গিয়ে সেবা দেন। প্রতিদিন হাসপাতাল খোলা থাকে।” উল্লেখ্য, কালিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই কেন্দ্রে মোট ১০টি পদ রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ পদই শূন্য। ফলে বছরের পর বছর ধরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হাসপাতালটি পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়, আর স্থানীয়রা রয়ে গেছেন স্বাস্থ্যসেবার বাইরে। SHARES অপরাধ বিষয়: