১১ হাজার হেক্টর সবজিক্ষেত ডুবলো বন্যার পানিতে
নিউজ ডেস্ক :
হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে গোমতী নদীর দুই পাড়ের চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে। পানির নিচে চলে গেছে প্রায় ১১ হাজার হেক্টর সবজিক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসলি জমি। এতে কুমিল্লার আদর্শ সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবীদ্বার ও পাশের উপজেলার শত শত কৃষক মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, করলা, লাউ, মুলাসহ বিভিন্ন সবজি বাজারে তোলার আর মাত্র দুই-একদিন বাকি ছিল। ঠিক এমন সময় আকস্মিক বন্যায় সব ফসল পানিতে ডুবে গেছে। কেউ কেউ এখনো পানিতে নেমে করলা সংগ্রহ করছেন, বাকিটুকু পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।
আমতলীর কৃষক সুজন মিয়া বলেন, “৩ একর জমিতে সবজি চাষ করেছিলাম। প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক ঋণ ও কিস্তি নিয়ে শুরু করা কৃষিকাজে এই ক্ষতির পর পরিণতি কী হবে বুঝতে পারছি না।”
কাচিয়াতলীর কৃষক মনির হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, “গতবারও ক্ষতিপূরণ পাইনি, এবারও সবজিসহ জমি পানির নিচে। জীবিকা নিয়ে শঙ্কায় আছি।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কুমিল্লা জেলা উপপরিচালক আইউব মাহমুদ জানিয়েছেন, গোমতীর চর এলাকায় চলতি বন্যায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি কমলে পূর্ণাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পাওয়া যাবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সরকারকে জানানো হবে।
এদিকে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতীর পানি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ৪৮ মিটার উচ্চতায় ছিল। যদিও বিপৎসীমা ১১ দশমিক ৩০ মিটার, কিন্তু এর আগেই চরের জমিগুলো ডুবে যায়।
চরাঞ্চলের কৃষকরা এখন সরকারি সহায়তা ও ক্ষতিপূরণের আশায় চেয়ে আছেন। তাদের দাবি—দ্রুত জরিপ করে প্রণোদনার ব্যবস্থা না করা হলে বড় ধরণের আর্থিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বেন তারা।