১০ বছরের শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে বস্তায় ভরে ছাদে ফেলে রাখলেন শিক্ষক, এলাকায় চরম ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক |
গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক হাফিজিয়া মাদরাসায় মাত্র ১০ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে চটের বস্তায় ভরে রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শনিবার (২৮ জুন) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী নূরে মদিনা হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় ঘটে এই অমানবিক ঘটনা।
অভিযুক্ত শিক্ষক মুফতি জাকারিয়া (২৯), মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ এলাকার বাসিন্দা এবং মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনার পর স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশে খবর দিলে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, সকালে কোনো এক কারণে শিশুটিকে বেধড়ক মারধর করেন শিক্ষক জাকারিয়া। এরপর শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে এবং পরিবারকে জানানোর কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বস্তায় পুরে দোতলা ভবনের রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখেন শিক্ষক। শিশুটির মাথা শুধু বাইরে ছিল, যেন পালাতে না পারে—এমনটা ছিল শিক্ষকের ব্যাখ্যা। পরে মাদরাসার গেট বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন তিনি।
ঘটনার সময় শিশুটি আতঙ্কে কাঁপছিল। পরে এক সহপাঠী জানালা দিয়ে বাইরে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা দ্রুত ছুটে এসে পুলিশে খবর দেন।
শিশুটির বাবার বক্তব্য, “আমার সন্তান কোনো ভুল করলেও এমন অমানবিক আচরণ প্রাপ্য নয়। শিক্ষক যদি এমন হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তা কোথায়?” তিনি দ্রুত বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষক জাকারিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষক পূর্বেও শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালিয়েছেন। দ্রুত বিচার না হলে বড় ধরনের জনরোষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।