লাশ নিল না কেউ, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ফোন বন্ধ করে দিলেন ছেলেও! বিডি সময় নিউজ ২৪ বিডি সময় নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ১:১৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২৫ লাশ নিল না কেউ, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে ফোন বন্ধ করে দিলেন ছেলেও! নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের বাসিন্দা ষাটোর্ধ মো. ইব্রাহিম শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তবে মৃত্যুর খবর শুনেও তার আপন রক্ত—নিজের একমাত্র ছেলে—বাবার লাশ গ্রহণ তো দূরের কথা, দাফন কাজেও এগিয়ে এলেন না। এমনকি একপর্যায়ে মোবাইল ফোনও বন্ধ করে দেন তিনি। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে ইব্রাহিম মৃত্যুবরণ করেন। এরপর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। মরদেহ পরিচয় শনাক্তের পর তার ছেলে ইসরাফিল সিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ছেলের ভাষ্য ছিল, তিনি বাবার লাশ গ্রহণে অনিচ্ছুক এবং দাফনে অংশ নিতে পারবেন না। একপর্যায়ে তিনি মোবাইল বন্ধ করে দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও মানবিক সংগঠন ‘বাতিঘর’-এর সদস্যরা হতবাক হন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার এসআই মো. ওহিদুর রহমান চৌধুরী জানান, “মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া একটি ব্যাগে থাকা ভিজিটিং কার্ডের সূত্র ধরে তার পুরোনো কর্মস্থল দিনাজপুরের একটি মাদরাসার খোঁজ পাই। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় তিনি এক সময় ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং প্রায় ৩০ বছর আগে কসবা উপজেলার এক নারীকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের সংসারে একটি ছেলে জন্ম নেয়। তবে সেই স্ত্রী পরবর্তীতে অন্য একজনকে বিয়ে করে সন্তানসহ আলাদা হয়ে যান। এরপর থেকেই ইব্রাহিম একাকী জীবন যাপন করছিলেন।” ‘বাতিঘর’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. আজহার উদ্দিন বলেন, “আমরা সাধারণত বেওয়ারিশ লাশ দাফনের কাজ করি। কিন্তু ইব্রাহিমের বিষয়টি ভিন্ন। তার পরিচয় ছিল, সন্তান ছিল, তবুও তাকে পরিত্যক্তের মতো দাফন করতে হয়েছে। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আমরা ইব্রাহিমের লাশ দাফন করি।” চার বছরে ২০০টি লাশ দাফন করলেও, এ ঘটনাটি সংগঠনের সদস্যদের হৃদয়ে গভীর দাগ কেটেছে বলে জানান আজহার উদ্দিন। মানবিক বোধের অবক্ষয় এবং পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েন কতটা ভয়াবহ হতে পারে—ইব্রাহিমের ঘটনা যেন তারই এক নির্মম প্রমাণ। SHARES অপরাধ বিষয়: