মুরাদনগরে হিন্দু নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ: আ.লীগ নেতাকে বিএনপি বানিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচার

নিজস্ব প্রতিবেদক | 

কুমিল্লার মুরাদনগরে বসতঘরের দরজা ভেঙে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফজর আলীর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর অভিযুক্তকে বিএনপি নেতা বলে প্রচার চালানোয় এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য ও বিভ্রান্তি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৬ জুন (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতে উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন এবং তিনি নিজেই মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, রাত ১০টার দিকে অভিযুক্ত ফজর আলী ওই নারীর ঘরের দরজায় এসে ডাকাডাকি শুরু করে। তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে ফজর আলী জোরপূর্বক দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে এবং তাকে ধর্ষণ করে। তার চিৎকার শুনে পাশের বাড়ির আত্মীয় ও পূজার অনুষ্ঠান থেকে আসা কয়েকজন লোক ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। তারা ফজর আলীকে ঘটনাস্থলেই হাতে-নাতে দেখতে পান বলে দাবি করেছেন।

বিভ্রান্তিকর প্রচার ও রাজনৈতিক অপপ্রয়াস

স্থানীয়দের মতে, অভিযুক্ত ফজর আলী দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি ১১নং রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকনের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত।

তবে ঘটনার পরপরই একটি ফেসবুকভিত্তিক মিডিয়া পেজ ‘মুরাদনগর লাইভ টিভি’ থেকে ফজর আলীকে বিএনপি নেতা হিসেবে প্রচার করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই পেজটি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের মিডিয়া উইংয়ের সঙ্গে যুক্ত।

বিষয়টি নিয়ে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অন্জন ও সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক এক যৌথ বিবৃতিতে তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারা অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগের মিডিয়া উইং পরিকল্পিতভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “সাবেক এমপি ইউসুফ হারুনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বারবার বিএনপিকে অপরাধের সঙ্গে জড়ানোর অপচেষ্টা করছে, যা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

পুলিশের অবস্থান

মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, “ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। আশা করছি শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।”