মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ড সাজানো দাবি চবি ছাত্রদল নেতার
নিউজ ডেস্ক :
রাজধানীর মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডকে ‘সাজানো নাটক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হৃদয় তার পোস্টে লিখেছেন, “অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, গতকালকের খুন ছিল একটা বড় পরিকল্পনার অংশ, একটা সাজানো মঞ্চ, যেটা মঞ্চায়ন করেছে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করা গুপ্ত সংগঠন। বিএনপি খুন করেনি অথচ একদল গর্দভ বিএনপির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করেছে। ঢাবি ছাত্রদল ন্যায়বিচারের দাবিতে মিছিল করেছে অথচ কিছু গুপ্ত সংগঠন ছাত্রদল নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে।”
সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডের সময় আশপাশে কিছু পথচারী নির্লিপ্তভাবে হাঁটছিলেন, যা ঘটনাটিকে পরিকল্পিত নাটকীয়তা বলেই সন্দেহ জাগায়। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান, হত্যার পেছনে কোনো গোপন সংগঠনের যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন করতে।
ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বেই খুন: পুলিশের দাবি
প্রসঙ্গত, ৯ জুলাই সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে নির্মমভাবে খুন হন ভাঙারি ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, মিটফোর্ড এলাকায় ‘সোহানা মেটাল’ নামে একটি দোকানে তিনি ভাঙারি ও পুরোনো বৈদ্যুতিক কেবল ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুতের তামা ও সাদা তারের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সোহাগের সঙ্গে বিরোধে জড়ান মাহমুদুল হাসান মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু। তারা সোহাগের ব্যবসার ৫০ শতাংশ দাবি করেছিলেন এবং নিয়মিত চাঁদা চাইতেন। এ বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিহত সোহাগ এবং হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত মহিন ও টিটুসহ অধিকাংশ আসামি ৩০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মামলা ও প্রতিবাদ
নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার পর সারাদেশে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনাকে ঘিরে বিতর্ক ও রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টি অবস্থানও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।