নড়াইল-যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে আড়াই বছরে ৬৯ দুর্ঘটনা, প্রাণ গেছে ৪১ জনের
মো. হাবিবুর রহমান, নড়াইল:
পদ্মা ও মধুমতী সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়েছে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কে। গত আড়াই বছরে এই সড়কে ঘটেছে ৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ৯৯ জন। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সড়ক প্রশস্তকরণ না হলে দুর্ঘটনা আরও বাড়বে।
প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক বর্তমানে সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে পার হওয়ার পর নড়াইল-যশোর-বেনাপোল অংশে যানবাহনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় ওভারটেকিং ও ক্রসিংয়ের সময় প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটছে।
তুলারামপুর হাইওয়ে থানার তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ৬৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হন ৪১ জন এবং আহত হন ৯৯ জন। অবৈধ যানবাহনের চলাচল এবং সরু রাস্তা এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
নড়াইল রুটে নিয়মিত চলাচল করা চালক সোলাইমান ও রিপন শেখ জানান, সড়কটি সরু হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। বিপরীত দিক থেকে আসা ভারী যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়ানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
এ বিষয়ে তুলারামপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, “দুর্ঘটনা রোধে সড়ক প্রশস্ত করা জরুরি। যানবাহনের চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বেড়েছে।”
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, “ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বেনাপোল পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এছাড়া মধুমতী সেতুর নড়াইল প্রান্ত থেকে যশোর পর্যন্ত সড়ক আরও ১২ ফুট করে দুই পাশে প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর দেশে প্রথম ছয় লেনবিশিষ্ট মধুমতী সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যানবাহন এই রুট দিয়ে চলাচল শুরু করে। অথচ মহাসড়কটি পর্যাপ্ত প্রশস্ত না হওয়ায় তা এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটিকে নিরাপদ করে তোলা হোক।