নড়াইলে একমাত্র পরীক্ষার্থীও পাস করেনি বালিকা বিদ্যালয়ে

প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২৫

নড়াইলে একমাত্র পরীক্ষার্থীও পাস করেনি বালিকা বিদ্যালয়ে

রাশেদ রাসু, নড়াইল থেকে :

নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের মুড়দাইড় গ্রামে অবস্থিত মুড়দাইড়-তালতলা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিলেন মাত্র একজন ছাত্রী। দুঃখজনকভাবে তিনিও পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করে মাত্র ৭ জন ছাত্রী। দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলেও নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত ছিল না তারা। এদের মধ্যে ৩ জনের বিয়ে হয়ে যায়, ৩ জন লেখাপড়া ছেড়ে দেয়। অবশিষ্ট একজনই এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও পাস করতে পারেননি।

প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৯৯৭ সালে প্রায় ৭০ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে এক সময় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল দুই শতাধিক। ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ১৮ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেন। তবে দীর্ঘদিনেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় ধীরে ধীরে শিক্ষক সংকট ও শিক্ষার্থীর হার কমতে শুরু করে।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলীম ফকির বলেন, “স্কুলের শুরুতে ভালো ফলাফল ছিল। কিন্তু এমপিওভুক্ত না হওয়ায় মেধাবী শিক্ষকরা অন্যত্র চলে যান। এতে শিক্ষার মান ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হয়।”

গত পাঁচ বছরের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে,

২০২১ সালে ৭ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেন,

২০২২ সালে ৩ জন অংশ নিয়ে সবাই পাস করেন,

২০২৩ সালে ২ জন অংশ নিয়ে দুজনেই ফেল করেন,

২০২৪ সালে ২ জন অংশ নিয়ে দুজনেই অকৃতকার্য হন,

২০২৫ সালে একজনই অংশগ্রহণ করেন এবং তিনিও ফেল করেন।

এ বিষয়ে নড়াইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “বিদ্যালয়টি ২৮ বছরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা হতাশ। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না এবং কোনো ধরনের প্রশিক্ষণেও অংশ নেন না। তারপরও বিদ্যালয়টির অবস্থা বিবেচনায় আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।”

বিদ্যালয়ে বর্তমানে কতজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী রয়েছেন—এই প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি।