নড়াইলে অনলাইন প্রতারণা: রাজকীয় জীবনযাপন, দুই ভাইসহ গ্রেফতার ৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, নড়াইল
অনলাইন প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছিলেন এক প্রতারক চক্রের সদস্যরা। পরিবার ও সমাজকে ধোঁকা দিয়ে মাদক ও অনলাইন গেমিংয়ে অর্থ ব্যয় করতেন তারা। শেষ পর্যন্ত নড়াইল জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে এ চক্রের চার সদস্য।
সোমবার (৭ জুলাই) কালিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ও যাদবপুর এলাকায় দীর্ঘ ৮ ঘণ্টার অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে প্রতারণায় ব্যবহৃত ছয়টি মোবাইল ও একাধিক সিম কার্ড জব্দ করে পুলিশ।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন—রঘুনাথপুর গ্রামের মো. মুসাব্বির মুন্সি ছিপাতুল্য (২৮), যাদবপুর গ্রামের দুই ভাই মো. নাজমুল হুসাইন (৩১) ও বাপ্পি হাসান ওভি (২৭), এবং একই এলাকার মো. রনি মীনা (৪১)।
নড়াইল সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ ও প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এজেন্টদের মাধ্যমে অন্যের নামে নিবন্ধিত সিম চড়া দামে কিনে প্রতারণায় ব্যবহার করতো। ফেসবুকে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলত এবং পেইজ বুস্টিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা করত।
এ চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে যশোর, নড়াইল, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জেলার সাধারণ মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল বলে জানায় ডিবি।
ভুক্তভোগী মাদারীপুরের নয়ন টিকাদার জানান, একটি মোবাইল ফোনের বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে প্রথমে ৩০০ টাকা দেন, পরে ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করলেও ফোনটি পাননি। তার অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য জমানো টাকা ছিল সেটি। আরেক ভুক্তভোগী আহাদ জানান, একটি মোটরসাইকেল কেনার জন্য তিনি এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা দিয়েও প্রতারণার শিকার হন।
আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, প্রতারক চক্র গ্রেফতার এড়াতে বারবার ঠিকানা ও যোগাযোগ মাধ্যম পরিবর্তন করলেও, পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের শনাক্ত করে। এ ধরনের প্রতারণা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি অনলাইনে লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।