দাফনের তিন দিন পর মরদেহ উত্তোলন করে পুনরায় দাফন, এলাকায় চাঞ্চল্য

প্রকাশিত: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২৫

দাফনের তিন দিন পর মরদেহ উত্তোলন করে পুনরায় দাফন, এলাকায় চাঞ্চল্য

নিউজ ডেস্ক :

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী গ্রামে দাফনের তিন দিন পর এক বৃদ্ধের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে পুনরায় অন্য স্থানে দাফন করার ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, সোনামুখী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আব্দুস সাত্তার (৬৭) গত ৯ জুলাই স্থানীয় একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ওইদিনই তাকে গ্রামের জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে দাফন করা হয়। তবে ১৩ জুলাই (শনিবার) সকালে তার বাড়ির পাশে একটি নতুন কবর দেখতে পান স্থানীয়রা।

আব্দুস সাত্তারের ভাতিজা মজনু মিয়া জানান, “চাচা একাই বাড়িতে থাকতেন। মৃত্যুর পর তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু আজ সকালে দেখি, বাড়ির পাশে নতুন একটি কবর। আমাদের ধারণা, সেটি চাচার মরদেহ।”

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক বৃদ্ধ জানান, গভীর রাতে কবরস্থানের পাশে খোঁড়াখুঁড়ির শব্দ শুনে তিনি বাইরে বের হন। তখন তিনি পাঞ্জাবি পরা পাঁচজনকে কবর খুঁড়তে দেখেন। এগিয়ে গেলে তারা ধমক দিয়ে সরে যেতে বলেন, ফলে তিনি ভয় পেয়ে ফিরে আসেন।

স্থানীয়দের ধারণা, আব্দুস সাত্তারের জীবদ্দশায় প্রকাশ করা শেষ ইচ্ছা পূরণ করতেই কেউ হয়তো এ কাজ করেছে। তার বন্ধু মাসুদ বলেন, “সাত্তার ছিলেন একজন তরিকাভক্ত মানুষ। তিনি জীবিত অবস্থায় বলেছিলেন, বাড়ির পাশে যেন তাকে দাফন করা হয়। জায়গাটি সরকারি খাসজমি হওয়ায় তখন তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এখন কেউ তার ইচ্ছা পূরণ করেছে।”

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, “সাত্তার সাহেবের কবরের বিষয়ে তিনি নিজেই জীবিত অবস্থায় বলেছিলেন। আজকে দেখি, সেই জায়গাতেই কবর দেওয়া হয়েছে। তবে কারা দিয়েছে, এখনো জানা যায়নি।”

কাজিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ কবরস্থান থেকে উত্তোলন করে নতুন স্থানে দাফনের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে কেউ এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।”

এ ঘটনায় এলাকায় চলছে নানা গুঞ্জন। কেউ কেউ বিষয়টিকে একজন ধর্মভীরু ব্যক্তির শেষ ইচ্ছা পূরণ হিসেবে দেখলেও, রাতের আঁধারে মরদেহ উত্তোলন ও গোপনে দাফনের ঘটনাকে অনেকে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন।