থানা হেফাজতে বিষপানে নারীর মৃত্যু, তিন পুলিশ বরখাস্ত
নিউজ ডেস্ক :
রাজধানীর ভাটারা থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিষপান করে ফিরোজা আশরাফী (২৭) নামে এক নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে থানার তিন পুলিশ সদস্যকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পুলিশ ফিরোজাকে একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান জানান, থানায় আনার পর আশরাফী শ্বাসকষ্টের কথা বললে ‘লিগ্যাল এইড’ সংগঠনের সহায়তায় বাসা থেকে তার ইনহেলার আনা হয়। কিন্তু ইনহেলারের প্যাকেটের ভেতরে ছিল বিষ, যা পান করার পর আশরাফীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জানা যায়, আশরাফীর সঙ্গে তার স্বামী ইসমাইল কামাল রিসাদের দাম্পত্য কলহ চলছিল। বৃহস্পতিবার ভোরে পল্লবীতে স্বামীর বাসায় গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় ইসমাইলের লিঙ্গ কর্তন করেন তিনি। পরে নিজেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে ইসমাইলের স্বজনরা হাসপাতালে গেলে তাদের সঙ্গে আশরাফীর কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আশরাফী ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান।
পরে পুলিশ তাকে ভাটারা থানায় নিয়ে এলে পল্লবী থানা পুলিশ জানায়, আশরাফীর বিরুদ্ধে স্বামীর অঙ্গহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং তাকে হেফাজতে নেওয়া হবে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষপান করেন আশরাফী।
ঘটনার পর ভাটারা থানার এসআই জামাল হোসেন, নারী কনস্টেবল শারমিন এবং নাছিমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, এ ঘটনায় ভাটারা থানায় ‘আত্মহত্যা প্রচেষ্টা’ আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। অন্যদিকে, আশরাফীর স্বামী ইসমাইল বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং চিকিৎসকদের মতে, তার ৮০ শতাংশ লিঙ্গ কর্তন করা হয়েছে।
এই ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে থানায় পুলিশ হেফাজতে বিষ কোথা থেকে এলো, এবং একজন সন্দেহভাজন নারী কীভাবে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিষ পান করতে পারলেন। তদন্তে উঠে এলে সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।