থানায় হামলা, আসামি ছিনতাই: ওসিসহ আহত ২৩

প্রকাশিত: ৪:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২৫

থানায় হামলা, আসামি ছিনতাই: ওসিসহ আহত ২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সংঘটিত এই ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্তত ২৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাতের আঁধারে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন দুর্বৃত্ত একযোগে থানায় হামলা চালায়। হামলাকারীরা থানার ভেতরে ঢুকে চেয়ার-টেবিল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ভাঙচুর করে এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র তছনছ করে দেয়। ইট-পাটকেল ছুড়ে জানালার কাচ ও দরজা ভেঙে ফেলে। পুলিশের বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ বেধে যায়।

পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, দুর্বৃত্তরা পুলিশের কাছ থেকে হাজতখানার তালার চাবি ছিনিয়ে নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামি বেলাল হোসেন ও সোহেল রানা চপলকে জোরপূর্বক মুক্ত করে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে, তবে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। পরে লালমনিরহাট, হাতিবান্ধা ও কালীগঞ্জ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওসি আরও জানান, হামলায় জড়িত অনেককে শনাক্ত করা গেছে। তাদের অধিকাংশই স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় সরোরবাজার এলাকায় চাঁদাবাজির সময় বেলাল ও সোহেলকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ তাদের এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, “বিএনপি নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে পাটগ্রামে পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে। হাতেনাতে ধরা পড়ার পর তাদের ছিনিয়ে আনতেই পরিকল্পিত হামলা চালানো হয়।”

তবে পাটগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান সোহেল দাবি করেন, “এটি বিএনপি ও পুলিশের কোনো সংঘর্ষ নয়। মূলত ঘটনাটি পাথর কোয়ারি ইজারাদারদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।”

ঘটনার পরপরই লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, ডিআইজি ও জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।