ঝোপে পুঁতে রাখা ব্যবসায়ীর বস্তাবন্দি দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার: সাবেক কর্মচারী ও তার স্ত্রী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ৩:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২৫

ঝোপে পুঁতে রাখা ব্যবসায়ীর বস্তাবন্দি দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার: সাবেক কর্মচারী ও তার স্ত্রী গ্রেপ্তার

নিউজ ডেস্ক :

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। স্থানীয় এক পোলট্রি ব্যবসায়ী মো. মামুনের (৩৫) দ্বিখণ্ডিত মরদেহ বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে কলমপতি ইউনিয়নের নাইলেছড়ি মাঝেরপাড়া এলাকার একটি ঝোপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত মামুন কাউখালীর সুগারমিল আদর্শগ্রামের বাসিন্দা। পরিবারে স্ত্রী, তিন ও আট বছর বয়সী দুই ছেলে এবং মাত্র নয় মাস বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

◼ কীভাবে ঘটল নৃশংস হত্যাকাণ্ড?

পুলিশ জানায়, মামুন নিখোঁজ হন গত ৭ জুলাই বিকেলে। সেদিন রাতে স্ত্রীকে ফোন করে তিনি দুটি ব্যাংক চেক চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট এলাকার এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিতে বলেন। পরদিন অর্থাৎ ৮ জুলাই মামুনের নম্বর থেকে ফোন করে অপহরণের কথা জানানো হয় এবং দাবি করা হয় ১০ লাখ টাকা চাঁদা।

পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলে কাউখালী থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে, মামুনের সাবেক কর্মচারী মো. কামরুল ইসলাম (৩০) ও তার স্ত্রী সাথী আক্তার এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

◼ গ্রেপ্তার ও স্বীকারোক্তি

গত সোমবার লক্ষ্মীপুর জেলার ভবানীগঞ্জ থেকে কামরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে কামরুল জানায়, মামুনকে রানীরহাটে তাদের ভাড়া বাসায় চায়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে অজ্ঞান করা হয়। পরে স্ত্রী সাথী আক্তারের সহায়তায় তাকে হত্যা করে লাশ দ্বিখণ্ডিত করে বস্তায় ভরে রাঙামাটির মাঝেরপাড়ায় এনে ফুফা শ্বশুরবাড়ির পাশে পুঁতে রাখা হয়।

পুলিশ একইসঙ্গে কামরুলের স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করেছে।

◼ ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বই মূল কারণ?

কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম জানান, “ঘাতক কামরুল একসময় মামুনের অধীনে কাজ করলেও সম্প্রতি তারা যৌথভাবে ব্যবসা শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।”

কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে। ঘাতক কামরুলকে আদালতে পাঠানো হবে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে। ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”