জেলা পরিষদে ৬০ লাখ টাকার প্রকল্প দুর্নীতি, জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি

প্রকাশিত: ১২:১২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২৫

জেলা পরিষদে ৬০ লাখ টাকার প্রকল্প দুর্নীতি, জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি

নিউজ ডেস্ক :

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের তহবিল থেকে দুই প্রকল্পের নামে উত্তোলন করা ৬০ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে সাবেক চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, পরিষদের এক সদস্য ও এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি ছিল পার্বত্য ফল মেলা আয়োজন এবং অন্যটি ছিল ছাগল ও শূকর বিতরণ প্রকল্প।

অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৩০ জুন রূপালী ব্যাংক শাখা থেকে ফল মেলার নামে ৪৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং পূবালী ব্যাংক থেকে ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করেন পরিষদের সদস্য ও প্রকল্প আহ্বায়ক প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা। এসব চেকে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা। তবে জেলা পরিষদের নেজারত ও সংস্থাপন শাখায় এই অর্থের কোনো হিসাব জমা নেই।

প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে পরিষদের কেউই কোনো সুস্পষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। এমনকি আহ্বায়ক প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরাও বলেন, “আমাকে আহ্বায়ক করা হলেও প্রকৃত খরচ আমি পরিচালনা করিনি। চেক উত্তোলনের পর ফল মেলার অর্থ চেয়ারম্যান জোর করে নিয়ে নেন। বাকি টাকা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার সহকারী আশীষ চাকমার হাতে দিতে বাধ্য করা হয়।”

জানা গেছে, ফল মেলায় অংশ নেয় মাত্র ছয়টি স্টল। এর মধ্যে দুটি জেলা পরিষদের, একটি চেয়ারম্যানের বড় বোন মনদেবী ত্রিপুরার, একটি ব্যক্তিগত সহকারী নক্ষত্র ত্রিপুরার এবং বাকি দুটি স্থানীয় উদ্যোক্তার নামে বরাদ্দ ছিল। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ বছর কাউকে কোনো অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়নি।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি জুলাই মাসের শুরুতেই জিরুনা ত্রিপুরাকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে তার এবং আশীষ চাকমার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, “এই প্রকল্প দুটিতে যদি অনিয়ম হয়ে থাকে, তবে তা প্রকল্পের আহ্বায়ক ও তৎকালীন চেয়ারম্যান জানেন। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।”

এই অভিযোগের পর জেলা প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত তদন্তের দাবি উঠেছে স্থানীয় মহলে।