ছয় শিক্ষার্থী, পাঁচ শিক্ষক: সংবাদ প্রকাশের পর প্রধান শিক্ষককে শোকজ

প্রকাশিত: ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২৫

ছয় শিক্ষার্থী, পাঁচ শিক্ষক: সংবাদ প্রকাশের পর প্রধান শিক্ষককে শোকজ

প্রতিবেদক রাশেদ রাসু :

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ৯৯ নং উত্তর পূর্ব ছোট কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানমকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘তিন ক্লাসে পাঁচ শিক্ষক, ছয় শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এবং ‘ল্যাপটপ প্রধান শিক্ষকের বাসায়, ব্যবহার ব্যক্তিগত কাজে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে শিক্ষার্থী সংকট, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু না হওয়া, শিক্ষক উপস্থিতির অনিয়ম এবং সরকারি ল্যাপটপ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।

উপজেলা শিক্ষা অফিসের সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ জুলাই স্থানীয় এক সাংবাদিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখতে পান, বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও উপস্থিত ছিলেন ৪ জন। দুপুর ২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি লেখা হয়নি। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে উপস্থিত ছিল মাত্র ছয়জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন ল্যাপটপ প্রধান শিক্ষকের বাসায় রাখা এবং তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের প্রমাণও উঠে এসেছে।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ জুলাই প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানমকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শোকজ নোটিশে বলা হয়, দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও দাপ্তরিক শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের জন্য তার বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানাতে হবে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়টিতে কাগজে-কলমে ৫১ জন শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন শিক্ষার্থীই উপস্থিত থাকে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম থাকলেও তা কখনো ব্যবহার করা হয়নি। শিক্ষকরা সময়মতো বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন না এবং অনেক সময় শিক্ষার্থীদের আগেই ছুটি দিয়ে চলে যান।

রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকতার হোসেন বলেন, “সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার জবাব না এলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”