ঘুষের বিনিময়ে আসামি মুক্তি: বিপাকে লোহাগড়া থানার এএসআই ইলিয়াস ও কনস্টেবল হানিফ বিডি সময় নিউজ ২৪ বিডি সময় নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ৪:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২৫ ঘুষের বিনিময়ে আসামি মুক্তি: বিপাকে লোহাগড়া থানার এএসআই ইলিয়াস ও কনস্টেবল হানিফ ✍️ রাশেদ রাসু, লোহাগড়া থেকে: নড়াইলের লোহাগড়ায় নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লোহাগড়া থানার এএসআই ইলিয়াস হোসেন ও কনস্টেবল হানিফের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন” এর সমন্বয়ক কাজী ইয়াজুর রহমান বাবু বাদী হয়ে নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসসহ ২৯০ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে লোহাগড়া থানায় একটি নাশকতার মামলা দায়ের করেন। এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. জিল্লুর রহমান (গ্রাম: এড়েন্দা, কাশীপুর ইউনিয়ন) কে ২০২৫ সালের ৫ জুলাই রাতে এড়েন্দা বাসস্ট্যান্ড থেকে আটক করে এএসআই ইলিয়াস ও কনস্টেবল হানিফ। কিন্তু থানায় না এনে তাকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন মামলার বাদী বাবু। তিনি আরও দাবি করেন, আসামির কাছ থেকে আরও ১০ হাজার টাকা নেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল এবং সেই টাকা একজন পরিচিত ব্যক্তির কাছে রেখে গেছেন আসামি। ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে কাজী ইয়াজুর রহমান বাবু ৬ জুলাই রাতে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লোহাগড়া থানার ওসির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “বাকি ১০ হাজার টাকা আসামির নির্দেশে আমার এক পরিচিত ভাইয়ের কাছে রাখা হয়েছে, আপনারা গিয়ে নিয়ে নিন।” এই স্ট্যাটাস ভাইরাল হলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। গণমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে বাদী বাবু জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ করবেন এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবেন। এএসআই ইলিয়াসের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে তিনি পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে ১০ হাজার করে টাকা নিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন করে দেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই ইলিয়াস বলেন, “ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা ঐদিন আসামির বাড়িতে গিয়ে তাকে পাইনি, তার স্ত্রী ছিলেন।” তবে তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর মনে হচ্ছে, চাকরি থাকবে কি না সন্দেহ।” অন্যদিকে কনস্টেবল হানিফ বলেন, “আমি এএসআই ইলিয়াস স্যারের সঙ্গে ছিলাম, তবে ঘটনার বিস্তারিত কিছু জানি না।” লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে সত্যতা মিলিয়ে আমরা আইনক ব্যবস্থা নিব। তবে আমি গত দুইদিন ডাকাতি মামলার এক আসামিকে নিয়ে ঢাকায় ব্যস্ত ছিলাম।” এদিকে আসামি জিল্লুর রহমানের পরিবার জানিয়েছে, ঘটনাটি ফাঁস হওয়ার পর থেকে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের দাবি, অজ্ঞাত একটি নাম্বার থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে—“বাড়ি ছেড়ে ৪-৫ দিন অন্যত্র থাকুন, মোবাইল বন্ধ রাখুন।” সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নাশকতার মতো গুরুতর মামলায় ঘুষের বিনিময়ে আসামি মুক্তির অভিযোগে পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি চরমভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তারা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। SHARES অপরাধ বিষয়: