গাজীপুরে চুরির অপবাদে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৫

গাজীপুরে চুরির অপবাদে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

গাজীপুর প্রতিনিধি:

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চুরির অপবাদে হৃদয় মিয়া (২২) নামের এক তরুণ শ্রমিককে জানালার সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্মম এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ঘটনাটি ঘটে গত ২৭ জুন, তবে তা সামনে আসে কয়েকদিন পর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর। নিহত হৃদয় মিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলায়। ঘটনার পর ওই কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

শ্রমিকদের বিক্ষোভ, মামলা দায়ের

ডিউটি শেষে হৃদয় বাসায় না ফেরায় তার পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখতে পায়, শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় জানা যায়, হৃদয়ের মৃতদেহ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে সেখানে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ শনাক্ত করেন।

নিহতের বড় ভাই লিটন মিয়া কোনাবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় কারো নাম উল্লেখ না থাকলেও পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজন হিসেবে কারখানার শ্রমিক হাসান মাহমুদ ওরফে মিঠুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় জড়িত অন্যদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

তদন্তে নেমেছে শিল্প পুলিশ

ঘটনার পর গাজীপুর জেলা পুলিশ ছাড়াও শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকেও পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে। গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক। তদন্ত চলছে, দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।” তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে কারখানাটি দুদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও মঙ্গলবারের মধ্যে তা আবার চালু হতে পারে।

পরিবারের দাবি: নির্মম হত্যাকাণ্ড

নিহত হৃদয়ের পরিবারের অভিযোগ, তাকে পরিকল্পিতভাবে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে এবং বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরদেহ গোপনে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, হৃদয়কে জানালার সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় একাধিক ব্যক্তি মারধর করছে। ভিডিওটি দেখার পর অনেকেই ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে বিচার দাবি জানাচ্ছেন।