অভাবে দাম্পত্য কলহ, যমজ সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করলেন মা

প্রকাশিত: ১১:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০২৫

অভাবে দাম্পত্য কলহ, যমজ সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করলেন মা

নিউজ ডেস্ক :

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পারিবারিক কলহ ও অভাব-অনটনের জেরে ৫ মাস বয়সী যমজ কন্যা সন্তানকে পুকুরে ফেলে হত্যা করেছেন এক মা। বুধবার বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ওই মা শান্তা বেগম (২২)।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর শিশুদের হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে শান্তা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তার জবানবন্দি অনুযায়ী, স্বামী ও সংসারের দারিদ্র্য, মানসিক চাপ এবং দাম্পত্য কলহের কারণেই এই ভয়ানক সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

হত্যার নেপথ্যে কলহ-দারিদ্র্য

দুই বছর আগে শান্তা ও সোহাগ শেখের বিয়ে হয়। সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর বেশিরভাগ সময় শান্তা বাবার বাড়িতে ছিলেন। যমজ সন্তান জন্মের পর স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু স্বামী সোহাগের স্বল্প আয়ে সংসার ও শিশুদের খরচ মেটাতে না পারায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বেড়েই চলছিল।

গত ৭ জুলাই সন্ধ্যায় খাবার, দুধ ও ওষুধ আনার অনুরোধে স্বামীর সঙ্গে ফোনে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় শান্তার। এরপর তিনি ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় যমজ শিশু লামিয়া ও সামিয়াকে কোলে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন।

স্বামীকে ফাঁসাতে চেষ্টা

হত্যার পর আতঙ্কিত শান্তা প্রথমে স্বামীকে দায়ী করার চেষ্টা করেন এবং নানা নাটক সাজান। কিন্তু পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তার বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়া যায়। পরে সত্য ঘটনা স্বীকার করেন তিনি।

মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যান্ড অপারেশন) মো. ফিরোজ কবির বলেন, “শান্তার স্বীকারোক্তির পর তার দেখানো স্থান থেকে শিশুদের কাপড়সহ বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।”

এলাকাজুড়ে শোক ও ক্ষোভ

এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পাশাপাশি, একজন মায়ের হাতে এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

শিশুদের বাবা সোহাগ শেখকেও আটক করা হলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকায় তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।